নিউজ ডেক্স: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ামাত্রই দরজায় কড়া নাড়ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। কয়েকটি ধাপে নেওয়া এ নির্বাচনের প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা হবে চলতি (জানুয়ারি) মাসের শেষের দিকে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
সময়ের আলোকে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন একবারে হবে না, ধাপে ধাপে হবে। এই মাসের শেষের দিকে একটা তফসিল হবে। রোজার পরে আরেকটা তফসিল হবে। এভাবে কয়েকটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
তিনি বলেন, মোট চারশ প্লাস উপজেলায় নির্বাচন হবে। এর মধ্যে ভোটের জন্য আমাদের দুইশ উপজেলা প্রস্তুত আছে। তবে কয় ধাপে, কয়টি উপজেলার বা প্রথমে কোন কোন উপজেলার নির্বাচন হবে এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটি কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
যুগ্ম সচিব (নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-২) ফরিদ আহম্মদ খান সময়ের আলোকে বলেন, চলতি বছরে আমাদের সবশেষ বড় কোনো আয়োজন হলো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ ছাড়া চলতি বছরে আর কোনো বড় নির্বাচন নেই। কতটি উপজেলায় নির্বাচন হবে তা নিশ্চিত করে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে এ রাউন্ডে চারশ উপজেলায় নির্বাচন করতে হবে। লোকাল গভর্মেন্ট থেকে আমাদের কাছে তালিকা পাঠাবে। এর বাইরেও অল্পস্বল্প কিছু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও কয়েকটি পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, এসব উপজেলায় আগামী এপ্রিল ও মে মাসের মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে হবে। এর অগে অনেক পর্ব আছে, যেমন-১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা, এরপর রমজান। এরপর আগামী বছরে (২০২৫) রয়েছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এ ছাড়া বাকি সব নির্বাচন যেমন-জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচন এই কমিশনের শেষ মেয়াদে অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে সবশেষ ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে বিভাগওয়ারি ৪টি ধাপে এবং যেসব উপজেলার মেয়াদ পরে পূর্ণ হয়েছিল সেগুলো নিয়ে আরেকটি ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করেছিল কেএম নুরুল হুদা কমিশন।
২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রথমবারের মতো আইন প্রণয়ন করে সরকার। আইনের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে ওই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন। দায়িত্ব নিয়েই ওই বছরের ২৫ এপ্রিল প্রথম চ্যালেঞ্জ হিসেবে কুমিল্লা সিটি, ১৭৬টি ইউনিয়ন পরিষদ, পাঁচটি পৌরসভা এবং চারটি উপজেলা পরিষদে ভোটের আয়োজন করেছিল কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। এরপর একই বছরের ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনের সময় সিসি ক্যামেরায় ব্যাপক অনিয়ম দেখতে পেয়ে একে একে ৫০টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করে কমিশন। পরে আরেকটি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এই অবস্থায় নির্বাচনের যৌক্তিকতা না থাকায় পুরো নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করে নিজেদের কঠোর অবস্থানের জানান দিয়ে আলোচনায় আসে নির্বাচন কমিশন।
এরপর গত বছরের (২০২৩) মাঝামাঝি সময়ে ধাপে ধাপে বরিশাল, খুলনা, রংপুর, রাজশাহী এবং সিলেটসহ পাঁচ সিটি নির্বাচন সম্পন্ন করে বর্তমান কমিশন।
সবশেষ গত ৭ জানুয়ারি ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এখন কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও চলতি মাসের শেষ দিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে আবারও শুরু হবে নির্বাচনি কর্মযজ্ঞ। -সময়ের আলো