নিউজ ডেক্স : কক্সবাজারের চকরিয়ায় দুইপক্ষের মধ্যে ৬৫ কড়া জমির নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে একপক্ষ শরণাপন্ন হন এশিয়ার বৃহত্তম বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতিতে। এ নিয়ে সমিতি কর্তৃপক্ষ উভয়পক্ষকে (বাদী-বিবাদী) নিয়ে কার্যালয়ে শালিসী বৈঠকে বসে। কিন্তু দুইপক্ষের লোকজন সমিতির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় তর্কাতর্কির একপর্যায়ে একপক্ষের লোকজন ধারালো দা দিয়ে অপর পক্ষের লোকজনকে এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু করে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ রবিবার দুপুর পৌনে বারোটার দিকে সংঘটিত এই হামলায় চারজন গুরুতর আহত হয়। তন্মধ্যে জয়নাল আবেদীন বদন (৩৭) নামের একজন আঘাতের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে দৌঁড় দিয়ে সমিতির উঠানে গিয়ে গড়াগড়ি করতে থাকে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে জয়নাল আবেদীন বদন সেখানেই মারা যান। এ সময় আহত অপর তিনজনকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তন্মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।
নিহত জয়নাল আবেদীন বদন বদরখালী ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের টুটিয়াখালী পাড়ার আবদুস ছোবহানের পুত্র। আহতরা হলেন- নিহতের ভাই ওসমান গণি (২৬), মোহাম্মদ সাগর (২৫) ও মোহাম্মদ এহেছান (৩৭)। তন্মধ্যে আহত ওসমান গণির অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশের চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. তফিকুল আলম জানান, ৬৫ কড়া জমি নিয়ে আবদুল জলিল ও আবদুল কাদেরের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। সেই বিরোধ নিষ্পত্তি করতে বাদী-বিবাদীকে নিয়ে বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতিতে সালিশ বৈঠকে বসে সমিতির নেতৃবৃন্দ। কিন্তু সালিশ চলাকালে সমিতি কার্যালয়ে সামনে উভয়পক্ষের লোকজন জড়ো হয়। এ সময় তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ে এবং হামলার ঘটনা ঘটে।
চকরিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, জমির বিরোধ নিয়ে সমিতির কার্যালয়ে সামনে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ অকুস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার এবং নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো দা জব্দ করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তিসাপেক্ষে মামলা রুজু করা হবে।’
এ ব্যাপারে বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সভাপতি নুরুল আলম সিকদার এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন জনি দাবি করেছেন, জমি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে উভয়পক্ষকে নিয়ে সালিশ বৈঠক চলছিল। একইসময়ে উভয়পক্ষের লোকজন সমিতির কার্যালয়ের বাইরে রাস্তায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। -আজাদী অনলাইন