নিউজ ডেক্স : দুর্নীতির দায়ে সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন চাওয়া হয়েছে হাইকোর্টে। ওই জামিন আবেদনের ওপর শুনানির জন্য হাইকোর্টের রোববারের কার্যতালিকায় এসেছে।
শনিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রোববারের কার্যতালিকায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনটি ৩৬ নম্বরে রয়েছে। দুপুর ২টায় আপিল ও জামিন আবেদনের শুনানি শুরু হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে হাইকোর্টের এ বেঞ্চে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন উপস্থাপন করার পর আদালত আপিল গ্রহণের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন।
এর আগে খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য ৮৮০ পৃষ্ঠার জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। আবেদনে বয়স, শারীরিক অবস্থা ও সামাজিক মর্যাদা বিবেচনাসহ মোট ৩২টি যুক্তি দেখানো হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতের দেয়া রায়ে অর্থদণ্ড স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে (নিম্ন) দেয়া রায়ের নথিপত্র তলব করেছেন আদালত। আদেশের কপি হাতে পাওয়ার পর ১৫ দিনের মধ্যে এ কপি হাইকোর্টে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আপিলের গ্রহণযোগ্যতা শুনানিতে আদালত এসব আদেশ দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
তিনি বলেন, আদালত আপিল শুনানির জন্য আগামী রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন। ওইদিন তার (খালেদা জিয়া) জামিন আবেদনেরও শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আদালত ১৫ দিনের মধ্যে রায়ের নথি চেয়েছেন। একই সঙ্গে রায়ের সঙ্গে দেয়া জরিমানা স্থগিত করেছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত গত ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন। রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও একবছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ রায়ের জাবেদা নকল কপি খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হাতে পান ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেলে। এরপর সোমবার রাত এবং মঙ্গলবারে দফায় দফায় বৈঠক শেষ করার পর আপিল আবেদন চূড়ান্ত করেন আইনজীবীরা।
নিম্ন (বিচারকি) আদালত থেকে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার একদিন পর মঙ্গলবার আপিল আবেদন করা হয়। ৬০ পৃষ্ঠার মূল আপিলে ৪৪টি যুক্তি তুলে ধরে মোট এক হাজার ২২২ পৃষ্ঠার নথিপত্র আবেদনে নিম্ন আদালতের দেয়া সাজা বাতিল চাওয়া হয়েছে। আপিল আবেদনকারী আইনজীবী হলেন অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান।
রাজধানীর রমনা মডেল থানায় ২০০৮ সালের ৩ জুলাই ওই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় খালেদা জিয়া, তার দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট এ মামলার অভিযোগপত্র দেয় দুদক।