নিউজ ডেক্স : পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মোহাম্মদপুরে নিহত জঙ্গি মারজানের পুরো নাম নুরুল ইসলাম মারজান। তিনি গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিলেন বলে দাবি পুলিশের। এছাড়া তিনি নব্য জেএমবির অপারেশন কমান্ডার ছিলেন।
মারজানের বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের আফুরিয়া গ্রামে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ছাত্র। ২০১৬ সালে জানুয়ারিতে বাড়ি গিয়ে বিয়ে করে বাড়িছাড়া হন। সেই থেকে পরিবারের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই।
মো. নাজিম উদ্দিন ও সালমা খাতুনের ১০ সন্তানের মধ্যে মারজান চতুর্থ। তার আনুমানিক বয়স ২২-২৩ বছর। পুলিশের তদন্তে গুলশান হামলার ‘অপারেশন কমান্ডার’ হিসেবে মারজানকে শনাক্ত করা হয়।
গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস করে তিনি পাবনা শহরের পুরাতন বাঁশবাজার আহলে হাদিস কওমী মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি পাবনা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে দাখিল ও আলিম পাস করেন। এরপর ২০১৪ সালে ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগে। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে শেষবারের মতো বাড়ি গিয়েছিলেন। তখন খালাতো বোন প্রিয়তিকে বিয়ে করেন। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছাড়েন। এরপর থেকে পরিবারের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেননি তিনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফাহাদ নামে পরিচিত ছিলেন মারজান। ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় সিজিপিএ ৩.৪৮ পেয়ে দ্বিতীয় বর্ষে উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১৫ সালে দ্বিতীয় বর্ষের ছয়টি কোর্সের পরীক্ষা দিলেও বাকি পরীক্ষায় আর অংশ নেননি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরোঁয় জঙ্গি হামলায় দেশি-বিদেশি ২০ জিম্মি নিহত হয়। নিহত হন পুলিশের ঊর্ধ্বতন ২ কর্মকর্তা। সেনাবাহিনীর অভিযানে ৬ জঙ্গিও নিহত হয়।
এরপর এই ঘটনার তদন্তের দায়ভার পায় ডিএমপির নব্য গঠিত কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিট। তদন্তে এই হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কানাডিয়ান প্রবাসী বাংলাদেশি তামিম আহমেদ চৌধুরী এবং মারজানের নাম উঠে আসে। গত আগস্টে নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তামিম মারা গেলেও দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন মারজান।