Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | কক্সবাজারে হাজারো পর্যটকের রাস্তায় নির্ঘুম রাত যাপন

কক্সবাজারে হাজারো পর্যটকের রাস্তায় নির্ঘুম রাত যাপন

file-56

নিউজ ডেক্স : শীতকালীন অবকাশে খ্রিস্টমাস ডে (বড়দিন) ও সপ্তাহিক মিলে তিনদিনের ছুটি চলছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কক্সবাজার ছুটে এসেছেন বিপুল পর্যটক।

প্রত্যাশার অধিক পর্যটক আসায় আবাসিক সুবিধাসহ সব ধরণের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। ফলে আগাম বুকিং না দিয়ে বেড়াতে চলে আসা বিপুল সংখ্যক পর্যটক রাস্তায় নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন।

এসব পর্যটকরা নিজেদের পরিবহনকারী বাসসহ অন্যান্য যানবাহন, সৈকতের কিটকট, বালুচর, মসজিদে, শহরের প্রধান সড়কে ঘুরে বেড়িয়েছেন। এতে শিশু ও মহিলারা ভোগান্তিতে পড়েন বেশি। আবার কিছু পর্যটক নিরাপত্তার আশায় ঠাঁই নিয়েছিলেন পত্রিকা অফিসে। কিছু পর্যটক স্থানীয় বাসা-বাড়িতেও রাত্রি যাপন করে।

প্রাথমিক হিসাব মতে, শুক্রবার দিনে-রাতে কক্সবাজারে প্রায় ২ লক্ষাধিক পর্যটক এসে অবস্থান করছেন।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি ওমর সুলতানের মতে, শহরের আবাসিক হোটেল, গেস্ট হাউস, কটেজ ও সরকারী রেস্ট হাউসে প্রায় ১ থেকে সোয়া লাখ মানুষের রাত যাপনের সুবিধা রয়েছে। গাদাগাদি করে থাকলে হয়তো আরো কয়েক হাজার পর্যটক কক্ষে রাত যাপন করতে পারে। কিন্তু পর্যটক বেশি হওয়ায় এ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

তিনি আরো জানান, পুরো ডিসেম্বর মাস জুড়েই আবাসিক হোটেলগুলোতে শতকরা ৮০ ভাগ কক্ষ ভরপুর ছিল। আর সপ্তাহিক ছুটি ও বড়দিন মিলে টানা তিনদিনের জন্য প্রায় সব হোটেলের কক্ষই অগ্রিম বুকিং হয় আরো কয়েক মাস আগেই।

ওমর সুলতান জানান, আশা ছিল বর্ষবিদায় ও নব বর্ষবরণে লাখো পর্যটকে মুখর থাকবে কক্সবাজার। কিন্তু প্রত্যাশার দিগুণ পর্যটক এসেছেন কক্সবাজারে। তাই অনেক পর্যটক আবাসন সুবিধা না পেয়ে সৈকত এলাকাসহ রাস্তা-ঘাটে নির্ঘুম রাত পার করেছেন বলে খবর পেয়েছি।

কক্সবাজারে স্থানীয় এক পত্রিকায় কাজ করেন ছৈয়দ আলম। কাজ শেষ করে শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পত্রিকা অফিস থেকে বের হয়ে থানা রোডের মাথায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এমন সময় দেখেন ৮-১০ জন তরুণ ব্যাগ কাধে পৌরসভার দেয়াল ঘেঁসে বসে আছেন।

কৌতুহল নিয়ে কাছে গিয়ে দেখেন কয়েকজন বখাটে তাদের হোটেল ব্যবস্থা করে দিবে বলে বিভিন্ন প্রলোভনে দর-কষাকষি করছে। পর্যটক বুঝতে পেরে তাদের প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে নিজেই স্বল্প, মিডিয়াম এবং উচ্চ দামের ডজনাধিক হোটেলে নিজে ফোন করে মালিক ও ম্যানেজারের সাথে কথা বলেন। কিন্তু কোথাও রুম খালি নেই।

এদিকে রাতও বেড়ে যাওয়ায় কুয়াশার ভোগান্তি থেকে বাঁচাতে চট্টগ্রাম পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী এসব পর্যটকদের দৈনিক হিমছড়ি অফিসে নিয়ে অন্তত বসে হলেও রাত কাটানো সুযোগ করে দেন। ঘুমাতে না পারলেও নিরাপদে থাকতে পারায় নাম পর্যটকরাও বেজায় খুশি।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি বলেন, সরকারি দপ্তরের পদস্থ অনেকে কক্সবাজার এসেছেন। সরকারি রেস্ট হাউস কিংবা হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউজে যারা অগ্রিম বুকিং দেননি তাদের জন্য শুক্রবার রাতে অনেক জায়গায় যোগাযোগ করে একটি কক্ষও যোগাড় করা সম্ভব হয়নি।

পুরো পর্যটন এলাকায় শতাধিক পুলিশ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে সারারাত দায়িত্ব পালন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশ বক্স বসিয়ে মাইকিংয়ের মাধ্যমে পর্যটকদের নানা বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। আবার সঙ্গীকে হারিয়ে ফেললে সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে তাদের বক্সে।

সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করায় এখনো পর্যন্ত অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনার খবর পুলিশের কাছে আসেনি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!