আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের ওড়িশার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে সিগন্যালের ত্রুটি। রেলের পক্ষ থেকে একটি যৌথ পরিদর্শন রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ওই যৌথ রিপোর্টে সিগন্যালের ত্রুটির কথাই বলছেন রেল কর্মকর্তারা। তবে এটি প্রাথমিক রিপোর্ট। বিস্তারিত তদন্তের পর দুর্ঘটনার কারণ আরও স্পষ্ট হবে।
যৌথ পরিদর্শন রিপোর্টে বলা হয়েছে, আপ মেন লাইনে সবুজ সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ট্রেনটি সেই লাইনে প্রবেশ করেনি। ট্রেন প্রবেশ করে লুপ লাইনে। সেখানে আগে থেকে একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। তার সঙ্গে সংঘর্ষে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়।
রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়, এর মাঝে ডাউন লাইন দিয়ে বালেশ্বরের দিকে যাচ্ছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনের দু’টি বগি লাইনচ্যুত হয়।
কিন্তু মেন লাইনে সবুজ সিগন্যাল পাওয়া সত্ত্বেও করমণ্ডল এক্সপ্রেস কীভাবে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ ক্ষেত্রে সিগন্যাল দেওয়ায় কোনো গোলমাল হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যা ৭ টা ২০ মিনিটে ওড়িশার বালেশ্বর জেলার বাহাঙ্গা বাজার এলাকায় তিন ট্রেনের ভয়ংকর দুর্ঘটনাটি ঘটে। ট্রেনগুলোর একটি শালিমার থেকে চেন্নাইগামী সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস, অপরটি বেঙ্গালুরু থেকে হাওড়াগামী সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং অন্যটি মালবাহী ছিল।
ওড়িশার বালেশ্বেরে তিন ট্রেনের ভয়ংকর দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৬১ জন নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা হাজারের বেশি।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে যেসব সেনা ঘাঁটি রয়েছে সেখান থেকে জওয়ানদের সহায়তা কাজে যেতে বলা হয়েছে। তারা সেখানে উদ্ধার অভিযান, আহতদের চিকিৎসা দেবে। ইস্টার্ন কমান্ড থেকে সেনা মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং দল, অ্যাম্বুলেন্স ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিও মোতায়েন করা হয়েছে।
ভারতের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনাটি ঘটে ১৯৮১ সালে। যদিও সেটি ছিল প্রাকৃতিক কারণে। সেবার ঘূর্ণিঝড়ের শিকার হয়ে বিহারের একটি যাত্রীবাহী ট্রেন নদীতে পড়ে যায়। নিহত হয় ৮০০ প্রাণ। তা ছাড়া ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে ভারতে যত ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে শুক্রবারের ঘটনাটি সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী বলে মনে করছেন অনেকেই।
সূত্র: আনন্দবাজার