- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

এক পরিবারের ছয় সদস্য দগ্ধ

agun

নিউজ ডেক্স : নগরীতে আগুনে পুড়ে তিন বছরের শিশুসহ একই পরিবারের ছয়জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে নজরুল ইসলাম (৪০) নামে একজন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। বাকিদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল সকাল আটটায় চান্দগাঁও বাদশা চেয়ারম্যান ঘাটায় একটি ভবনের তৃতীয় তলায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে চান্দগাঁও থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। কেউ বলছেন বজ্রপাতের ঘটনা, কেউ বলছেন গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। তবে আসল ঘটনা তদন্তের পর জানা যাবে।

অগ্নিদগ্ধরা হলেন নজরুল ইসলামের স্ত্রী জুবাইদা বেগম (৩২), তার তিন বছর বয়সী ছেলে হাজ্জাজ, মা মনোয়ারা বেগম (৫০), বোন সেলিনা কলি ও ভাগিনা আজবির। নিহত নজরুল কর্ণফুলী ইপিজেডে একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে, ওই বাসায় দুইটি বেড রুম, একটি ড্রয়িং ও মাঝখানে একটি কিচেন রুম রয়েছে। জুবাইদার বড় বোন রহিমা বেগম গতকাল আজাদীকে বলেন, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ আমার ছোট বোন জুবাইদা আমাকে ফোন করে জানায়, ‘আপা আমাদের ঘরে আগুনে সব পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। মাঝখানের কিচেন রুম থেকে আগুন বের হচ্ছে। পাশে থাকা বেডরুমেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আগুনের কারণে বেডরুমে যেতে পারছি না।’ রহিমা বলেন, খবর পেয়ে চকবাজার থেকে আমরা দ্রুত তাদের বাসায় যাই। সেখানে গিয়ে দেখি বাড়ির সবাই অগ্নিদগ্ধ। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

রহিমা বলেন, ছোট বোনের স্বামী নজরুল চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে মারা গেছেন। বাকিদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বিশেষ করে বোনের শাশুড়ির অবস্থা খুবই খারাপ বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, কিভাবে আগুন লেগেছে সেই ব্যাপারে কেউ কিছু জানাতে পারছে না। আমার ছোট বোনও কিছু বলতে পারেনি। তবে আগুন লাগার আগে বাসায় একটা বিকট শব্দ হয়েছে বলে ওই বাসায় থাকা পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে রহিমা বেগম জানিয়েছেন। রহিমা বলেন, বাসায় গ্যাস লাইনের মাধ্যমে রান্নার কাজ করা হয়। আগুন লাগার পর ওইসব গ্যাস লাইন ঠিকঠাক থাকতে দেখা যায়। এর আগে গত রোববার ওই ভবনটির সব বাসায় গ্যাস লাইনগুলো ঠিক করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, সেলিনা কলির শরীরের শতকরা ১৫ ভাগ, হাজ্জাজের ২৫ ভাগ, আজবিরের ১৫ ভাগ, মনোয়ারা বেগমের ৭০ ভাগ ও জুবাইদার ১৭ ভাগ দগ্ধ হয়েছে। এদিকে গতকাল রাতে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের অপারেটর জানান, খুব সকালে ওই ঘটনাটি ঘটেছে।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দী জানান, ঘরটি দেখে আমাদের প্রাথমিক ধারণা হয়েছে গ্যাসের চুলা থেকে আগুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তিনি বলেন, চুলায় ভাত রান্না হচ্ছিল। সেটা উতরে পড়ে চুলার আগুন হয়ত নিভে যায়। এতে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। এরপর কেউ চুলা জ্বালাতে গেলে বিস্ফোরণ হয়। ঘরে পর্যাপ্ত অঙিজেন না থাকায় হয়ত তারা বেশি দগ্ধ হয়েছেন। সকালে আগুনে লাগলে স্থানীয়রা ওই বাসার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলে ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়।