কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া : আলাদত কতৃক ১৫ বছরের সাজা হয়েছে,কিন্ত তার ভাব দেখে মনে হবে যেন কিছুই হয়নি,প্রকাশ্যে এলাকায় অন্য দশ জনের মত বিচরণ করছে। অদৃশ্য কারনে পুলিশ ধরছেনা। উখিয়া-টেকনাফের ইয়াবা সসম্রাট খ্যাত, ১৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী হেলাল উদ্দিনসহ অপরাপর ৪ সহযোগি আদালত কর্তৃক জামিন প্রাপ্ত হয়ে দাপটের সাথে বিচরণ করলেও যেন দেখার কেউ নেই। প্রসাশনের নাকের ডগার উপর দিয়ে এসব আমামীর বিচরন করায় প্রসাশনের ভুমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্নে সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও ২ উপজেলায় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার তালিকাভুক্ত প্রায় আড়াই শতাধিক ইয়াবা ও মানবপাচারকারী অধরা থেকে যাওয়ার কারনে ইয়াবা ও মানবপাচার প্রতিরোধ করা যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। আদালতে দায়েরকৃত মামলা সুত্রে জানা গেছে, গত ২০১৪ ইংরেজী ৫ আগষ্ট ঢাকা যাত্রাবাড়ী ধলপুর এলাকায় কর্মরত বিজিবি’র নায়েক সুবেদার মোহাম্মদ শাহ আলমের নেতৃত্বে র্যাব-১০ এর সদস্যরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কস্থ মাতুয়াইল বিশ^রোড সংলগ্ন ফাইভ স্টার ভিলা নামক বাড়ীর পাশর্^স্থ জনৈক মুজিবুর রহমানের মালিকানাধীন ভবনের নিচ তলায় অভিযান চালিয়ে হ্নীলা পূর্ব লেদা গ্রামের জালাল সওদাগরের ছেলে হেলাল উদ্দিন, বনি আমিন, মোঃ নাজমূল হাসান ও মোঃ ইব্রাহিম হাওলাদারকে আটক করে। ডেমরা থানার উপ-পরিদর্শক মতবুবুল আলম মুঠোফোনে জানান, আটককৃতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাদের আস্তানায় তল্লাশী চালিয়ে ৩৯হাজার ৮শ পিস ইয়াবা, ১১লক্ষ ৮২হাজার ৩২৯ইয়াবা বিক্রির টাকা ও ১২টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ডেমরা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করে ধৃত আসামীতে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে ফের ইয়াবা ও মানবপাচার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রভাবশালী ইয়াবা ও মানবপাচারকারী হেলাল উদ্দিন সহ অপরাপর ৪ সহযোগি জামিনে বেরিয়ে আসার পর থেকে আত্মগোপন করে নিরবে নিভৃত্বে ইয়াবা ও মানবপাচার করে যাচ্ছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আসামীরা নির্ধারিত দিনে হাজির না থাকায় মহামান্য আদালত তাদের অনুপস্থিতিতে গত ২৭ আগষ্ট ২০১৭ইং তারিখে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি আবু নাছের স্বপন ও আসামীপক্ষের আইনজীবি এসএম নুর মোহাম্মদের যুক্তিতর্ক শ্রবণ শেষে আসামীদের দুষি সাব্যস্থ করে ১৯৯০সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯/১ এর ৯(খ) ধারামতে প্রত্যেককে ১৫বছরের সশ্রম কারাদ- ২০হাজার জরিমানা অনাদায়ে ৬মাসের বিনাশ্রম কারাদ-ে দ-িত করেন ঢাকা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত। পাশাপাশি আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন। স্থানীয় ইয়াবা ও মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এমএ কাশেম সহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইয়াবা স¤্রাট খ্যাত হেলাল উদ্দিন কালো টাকার প্রভাব খাটিয়ে একজন নিরাপরাদ ভাড়াটিয়াকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে তার উপর দ-িত সাজা অন্যজনকে দিয়ে খাটানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় সর্বমহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে এবং থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এলাকাবাসি বৃহত্তর জনস্বার্থে ওই সব সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছে।
উখিয়া-টেকনাফের বিপূল পরিমাণ রোহিঙ্গা অবস্থানের সুযোগে এলাকার প্রায় আড়াই শতাধিক তালিকাভূক্ত ইয়াবা ও মানবপাচারকারী আবারো পাচার কাজে সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ মাঈন উদ্দিন জানান, ইতিমধ্যে পাচারকারীর খপ্পর থেকে উদ্ধার করে প্রায় অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, ২শতাধিক রোহিঙ্গা নারী,পুরুষ,শিশুকে পাচারকারীর খপ্পর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শতাধিক দালালকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন ইয়াবা পাচারকারীদের আটক করার জন্য যাত্রীবাহি গাড়ীতে পুলিশ নিয়মিত তল্লাশী চালাচ্ছে। র্যাব-৭ এর মেজর রুহুল আমিন জানান, টেকনাফ থানার হ্নীলা হতে ইয়াবা নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার প্রাক্কালে যাত্রীবাহি গাড়ীতে তল্লাশী চালিয়ে ৬০হাজার পিস ইয়াবাসহ ২রোহিঙ্গা নারীকে আটক করে টেকনাফ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।