নিউজ ডেক্স : ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নগরীর বাকলিয়া থানার এসআই (উপপরিদর্শক) খন্দকার সাইফুদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল ৩১ জুলাই বাকলিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়েরের পর তাকে বরখাস্ত করা হয়। নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মোস্তাইন হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উপপরিদর্শক খন্দকার সাইফুদ্দিন পলাতক রয়েছেন। এর আগে ৩০ জুলাই রাতে সাইফুদ্দিনের ভাড়া বাসা থেকে ১৪ হাজার ১০০ পিস ইয়াবা সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। নগদ দুই লাখ ৩১ হাজার টাকাও জব্দ করা হয়। বিক্রির উদ্দেশ্যে সাইফুদ্দিন ওই বাসায় ইয়াবাগুলো মজুদ করেছিলেন বলে ধারণা করে পুলিশ। পরে ওই ঘটনায় বিকালে বাকলিয়া থানায় সাইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়। নগরীর বাকলিয়া থানাধীন হাফেজ নগরের হাজী গোফরান উদ্দিন মুন্সীবাড়ি এলাকার ওই বাসাটি সাইফুদ্দিন ভাড়া নিয়েছিলেন। সোমবার রাতে ওই বাসা থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়। বাকলিয়া থানায় করা এ মামলায় বাড়ির মালিকের ছেলে এসএম নাজিম উদ্দিন মিল্লাতকে (৩৭) প্রধান আসামি করা হয়েছে। পলাতক দেখানো হয়েছে এসআই সাইফকে। বাকলিয়া থানার ওসি প্রণব চৌধুরী জানান, র্যাব–৭ এর ডিএডি নাজমুল হুদা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
বাকলিয়া থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, ‘উপপরিদর্শক সাইফুদ্দিনের নামে ফৌজদারি মাম পৃষ্ঠার করতে বিষয়টি তদন্তে আমরা তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছি। ওই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি ফৌজদারি আইনে তার মামলা প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।’ পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, সহকারী কমিশনার (চকবাজার) নভেল চাকমাকে প্রধান করে তদন্ত কমিটিতে দুই থানার দুই পরিদর্শককে সদস্য করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন এবং চকবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফ হোসাইন।
এ প্রসঙ্গে র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মিমতানুর রহমান জানান, ‘পুলিশের উপপরিদর্শক সাইফুদ্দিন বাসাটি ভাড়া নিয়ে সেখান থেকে ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার পিস ইয়াবা ও নগদ দুই লাখ ৩১ হাজিার টাকা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ওই বাসার পাহারাদার সাইফুদ্দিনের সহযোগী নাজিম উদ্দিন মিল্লাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাসা থেকে এসআই সাইফের ব্যবহার করা পুলিশের পোশাক, হ্যান্ডকাপের কভারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও বই উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনার জন্য সাইফুদ্দিন বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল। অভিযানের সময় তাকে ওই বাসায় পাওয়া যায়নি। তিনি তার পরিবার নিয়ে অন্য আরেকটি বাসায় ভাড়া থাকেন। আমরা ওই বাসাতেও অভিযান পরিচালনা করেছি। সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও করা হয়েছে। এদিকে বিকালে বাড়ির মালিকের ছেলে ও অভিযোগ ওঠা এসআই সাইফের বিরুদ্ধে মামলা করেছে র্যাব।
র্যাব–৭ এর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, তিনতলা ভবনের নিচ তলার বাসাটি মাসিক আট হাজার টাকা ভাড়া দিতেন এসআই সাইফ। তার আগে চাক্তাই ফাঁড়ির এক পুলিশ সদস্য বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। বাসাটি তারা ‘টর্চার সেল’ হিসেবে ব্যবহার করতেন। শাহ আমানত সেতু চেকপোস্টে প্রতিদিন তল্লাশির নামে সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ ছিল সেখানকার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। চেকপোস্টটি বাকলিয়া থানার চাক্তাই ফাঁড়ির অধীনে।