- Lohagaranews24 - http://lohagaranews24.com -

আজ বিকেলে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া

khaleda-zia-20171014225038

নিউজ ডেক্স : আজ বুধবার বিকালে দেশে ফিরছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। চিকিৎসাশেষে তিন মাস পর লন্ডন থেকে ঢাকায় আসছেন তিনি। তবে দেশে ফেরার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না এ নিয়ে নানা মহলে আলোচনা এখন তুঙ্গে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, খালেদা জিয়া দেশে ফেরার পর তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে পুলিশ বলেছে, তারা গতকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কোন কাগজ হাতে পায়নি। তবে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, খালেদা জিয়া আইনের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল। তিনি দেশে ফিরে পরদিন আদালতে যাবেন।

এদিকে খালেদা জিয়াকে সংবর্ধনা জানাতে বিএনপির সিনিয়র নেতারা বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি দল ও দলের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিমানবন্দর এলাকায় জমায়েত হয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে রাস্তার পাশে অবস্থান নেবেন বলে জানা গেছে।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এরইমধ্যে চারটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে জিয়া অরফানেজ মামলা, জিয়া অরফানেজ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা, কুমিল্লায় নাশকতা মামলা এবং মানচিত্র ও জাতীয় পতাকা অবমাননার মামলা। এই চারটি মামলার মধ্যে একটি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ১৯ অক্টোবর ধার্য আছে।

বিএনপি নেতারা বলছেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলেও ভীত নন খালেদা জিয়া। এমনকি দলের নেতাকর্মীরাও পরবর্তী পদক্ষেপ দেখতে অপেক্ষায় আছেন। তবে দেশে ফিরেই খালেদা জিয়া আদালতের ধার্য করা তারিখগুলোতে হাজিরা দেবেন। সেক্ষেত্রে দেশে ফিরেই প্রথম হাজিরা দেওয়ার কথা রয়েছে ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার। এদিন ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে হাজিরা দিতে পারেন বিএনপি প্রধান। তবে লন্ডন থেকে দীর্ঘ সফরের ধকলের ওপর নির্ভর করবে, তার হাজির হওয়ার বিষয়টি।

সূত্র জানায়, বিএনপি নেতারা এরইমধ্যে খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন ১৯ অক্টোবর আদালতে হাজিরা দিতে। গত ১২ অক্টোবর চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ বৈঠকে দলীয় মহাসচিবের মাধ্যমে আইনজীবীরা এ বার্তা পৌঁছে দেন খালেদা জিয়ার কাছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও খালেদা জিয়ার মামলার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়া ১৮ অক্টোবর বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে দেশে এসে পৌঁছবেন। দীর্ঘ পথ জার্নি করার পরে তার মতো একজন বয়স্ক মানুষের কিছুটা অস্বস্তিবোধ করাটাই স্বাভাবিক। মামলার পরবর্তী তারিখ ১৯ অক্টোবর। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিট্যাবল ট্রাস্টের মামলায় হাজির দেওয়ার কথা রয়েছে তার।’

মাসুদ আহমেদ তালুকদার আরও বলেন, ‘১৮ অক্টোবর দেশে ফিরে পরদিনই আদালতে হাজির হওয়ার সামর্থ থাকবে কিনা তার, সেটা অনুমান করে বলা সম্ভব না। তবে এটা নিশ্চিত, ম্যাডাম জিয়া আইন মান্যকারী নাগরিক। তার বিরুদ্ধে কয়টা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সেটা, তিনি আদালত ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নাগরিক। তিনি সুস্থবোধ করলে অবশ্যই আদালতে হাজিরা দেবেন।’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৬ জুলাই খালেদা জিয়া লন্ডন যান। সেখানে তার পা, হাঁটু ও চোখের চিকিৎসা করানো হয় বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

তবে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে দলীয় এক সভায় বিএনপির সবোর্চ্চ নীতিনির্ধারনী ফোরাম স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, আইন–আদালতের প্রতি সম্মান জানিয়ে চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে খালেদা জিয়া দেশে ফিরেই জামিন নেবেন। মওদুদ আহমদ বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) আইন ও আদালতকে সম্মান দেখানোর জন্য তার চিকিৎসার কিছুটা অংশ বাদ দিয়ে দেশে চলে আসছেন। তিনি আসবেন এবং পরের দিন কোর্টে যাবেন। নিয়ম হলো যে, কারও বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হলে আসামি যদি আবার আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে, সঙ্গে সঙ্গে ওয়ারেন্ট সেখানেই শেষ হয়ে যায় এবং জামিনও পুনর্বহাল হয়। এটাই আমাদের আইনগত প্রক্রিয়া।’ আলোচনায় বেগম জিয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে ভয় করেন না বলেও মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ।